প্রযুক্তি

রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজ: ১০,০০০ এমএএইচ ব্যাটারির নতুন যুগের সূচনা!

স্মার্টফোনের জগতে একটি নতুন বিপ্লবের সূচনা করতে চলেছে রিয়েলমি। সম্প্রতি রিয়েলমি গ্লোবাল তাদের অফিসিয়াল এক্স পেজে একটি কনসেপ্ট ফোন উন্মোচন করেছে, যার নাম রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজ। এই ফোনটি সবার নজর কেড়েছে এর বিশাল ১০,০০০ এমএএইচ ব্যাটারির কারণে। এই ধরনের ব্যাটারি ক্ষমতা স্মার্টফোনের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত একটি বিরল ঘটনা।

রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজ

রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজ এই ফোনের বিষয়ে কিছু বিস্তারিত

রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজের এই কনসেপ্ট ফোনটি শুধুমাত্র ব্যাটারির ক্ষমতার জন্যই নয়, এর ডিজাইন এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার জন্যও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এই ফোনটি মাত্র ৮.৫ মিলিমিটার পুরু এবং ওজন মাত্র ২১০ গ্রাম। এত বড় ব্যাটারি থাকা সত্ত্বেও এর স্লিম ডিজাইন সত্যিই অবাক করার মতো। ফোনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে অত্যাধুনিক সিলিকন অ্যানোড প্রযুক্তি, যা ব্যাটারির এনার্জি ডেনসিটি ৮৮৭ ওয়াট-আওয়ার/লিটার পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এছাড়াও, ফোনটির অভ্যন্তরীণ গঠনকে নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে মিনি ডায়মন্ড আর্কিটেকচারের মাধ্যমে, যা ৬০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পেটেন্টের ফল।

এই ফোনের পিছনের প্যানেলটি সেমি-ট্রান্সপারেন্ট, যা ভেতরের প্রযুক্তির একটি আভাস দেয়। এটি মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি ৭৩০০ চিপ দ্বারা চালিত, সাথে রয়েছে ৮ জিবি র‍্যাম এবং ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ১৫-ভিত্তিক রিয়েলমি ইউআই ৪.০ এ চলবে এবং এর ডিসপ্লে হতে পারে কোয়াড-কার্ভড, সম্ভবত ১২০ হার্টজ রিফ্রেশ রেট এবং এফএইচডি+ রেজোলিউশন সহ।

বাজারে আসার সম্ভাবনা: যদিও এটি একটি কনসেপ্ট ফোন, তবে রিয়েলমি ইঙ্গিত দিয়েছে যে এই ফোনটি শীঘ্রই ভারতে জিটি ৭ সিরিজের অংশ হিসেবে লঞ্চ হতে পারে। তবে এটি এখনও বাণিজ্যিকভাবে উপলব্ধ নয়। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, এটি কি শুধুই একটি কনসেপ্ট, নাকি বাস্তবে রিয়েলমি এই ফোনটি বাজারে আনতে সক্ষম হবে? এক্স-এ ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে। কেউ কেউ এটিকে “থানোস ব্যাটারি” বলে ডাকছেন, আবার কেউ বলছেন, “পাওয়ার ব্যাঙ্কের দিন শেষ!”

ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া: রিয়েলমি গ্লোবালের এক্স পোস্টে ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়া বেশ মিশ্র। কেউ কেউ এই ফোনের বিশাল ব্যাটারি ক্ষমতা দেখে উচ্ছ্বসিত, আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন এর সফটওয়্যার সাপোর্ট নিয়ে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “জিটি ৬-এর মতো সফটওয়্যার সমস্যা এবং দুর্বল সাপোর্ট থাকবে না তো?” অন্য একজন ইন্দোনেশিয়ায় এই ফোনের লঞ্চের সময় জানতে চেয়েছেন।

রিয়েলমির উদ্ভাবনের ইতিহাস: ব্যাটারি এবং চার্জিং প্রযুক্তিতে রিয়েলমি সবসময়ই অগ্রগামী। তারা ইতিমধ্যে ৩২০ ওয়াট কনসেপ্ট চার্জিং প্রযুক্তি প্রদর্শন করেছে এবং জিটি নিও ৩ এবং জিটি ৩-এর মতো ডিভাইসে ২৪০ ওয়াট এবং ১৫০ ওয়াট চার্জিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। এই নতুন কনসেপ্ট ফোনটি তাদের উদ্ভাবনের আরেকটি পালক যোগ করেছে।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা: এই ফোনটি যদি বাজারে আসে, তবে এটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি লাইফের ক্ষেত্রে একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, এটি পাওয়ার ব্যাঙ্কের প্রয়োজনীয়তা একেবারে শেষ করে দিতে পারে। তবে বাণিজ্যিক সংস্করণে এর স্পেসিফিকেশন কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে বলে জানা গেছে।

রিয়েলমি জিটি ৭ সিরিজ নিয়ে আপনি কী ভাবছেন? এটি কি সত্যিই স্মার্টফোনের ভবিষ্যৎ, নাকি শুধুই একটি কনসেপ্টের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে? আপনার মতামত জানান!
[ছবি সৌজন্য: রিয়েলমি গ্লোবাল এক্স পোস্ট]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button