মুকেশ আম্বানি তাঁর প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি, মুম্বাইকে ১৫১ কোটি টাকা দান করলেন
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানি তাঁর প্রাক্তন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি (আইসিটি), মুম্বাইকে ১৫১ কোটি টাকার একটি নিঃশর্ত অনুদান ঘোষণা করেছেন। ১৯৭০-এর দশকে এই প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। এই দানটি তাঁর গুরু প্রফেসর এম এম শর্মার প্রতি ‘গুরু দক্ষিণা’ হিসেবে উৎসর্গ করা হয়েছে, যিনি তাঁকে এবং ভারতের রাসায়নিক শিল্পকে গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন

অনুষ্ঠানের পটভূমি
শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, মুম্বাইয়ের ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজিতে প্রফেসর মন মোহন শর্মার জীবনী “দ্য ডিভাইন সায়েন্টিস্ট” বইয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মুকেশ আম্বানি এই ঘোষণা করেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর কলেজ জীবনের স্মৃতি এবং প্রফেসর শর্মার প্রথম লেকচারের প্রভাবের কথা স্মরণ করেন, যা তাঁকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। আম্বানি প্রফেসর শর্মাকে “রাষ্ট্র গুরু – ভারতের গুরু” হিসেবে অভিহিত করেন এবং ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কারে তাঁর নীরব স্থপতি হিসেবে ভূমিকার প্রশংসা করেন
গুরু দক্ষিণার প্রতি সম্মান
মুকেশ আম্বানি তাঁর বক্তৃতায় ভারতীয় সংস্কৃতির ‘গুরু দক্ষিণা’র ধারণার উল্লেখ করেন, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের গুরুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “প্রফেসর শর্মা আমাকে বলেছিলেন, ‘মুকেশ, তোমাকে আইসিটির জন্য কিছু বড় করতে হবে।’ তাঁর নির্দেশ অনুসারে, আমি আইসিটি, মুম্বাইকে ১৫১ কোটি টাকার নিঃশর্ত অনুদান ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত।” এই দানটি প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অনুদানগুলির মধ্যে একটি, যা শিক্ষা এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গবেষণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে
প্রফেসর শর্মার প্রভাব
আম্বানি প্রফেসর এম এম শর্মার অবদানের কথা উল্লেখ করেন, যিনি উদারীকরণ-পরবর্তী ভারতে নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করেছিলেন এবং লাইসেন্স-পারমিট রাজ ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেন, “আমার বাবা ধীরুভাই আম্বানির মতো, তাঁরও ভারতীয় শিল্পকে অভাব থেকে বিশ্ব নেতৃত্বে নিয়ে যাওয়ার জ্বলন্ত আকাঙ্ক্ষা ছিল।” প্রফেসর শর্মা বিজ্ঞানীদের একাধিক প্রজন্মকে মেন্টর করেছেন এবং ভারতের রাসায়নিক শিল্পের উত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন
আইসিটির প্রতি নস্টালজিয়া
মুম্বাইয়ের এই প্রতিষ্ঠান, যাকে পূর্বে ইউনিভার্সিটি ডিপার্টমেন্ট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি (ইউডিসিটি) বলা হতো, সেখানে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় কাটান আম্বানি। তিনি বলেন, “ইউডিসিটি ক্যাম্পাসে আসা আমার কাছে সবসময় একটি পবিত্র মন্দিরে আসার মতো মনে হয়।” এই দানটি কেবল তাঁর গুরু প্রতি সম্মানই নয়, বরং শিক্ষা ও বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতিরও প্রতিফলন
ভবিষ্যতের প্রভাব
এই ১৫১ কোটি টাকার অনুদান আইসিটি, মুম্বাইকে গবেষণা, উদ্ভাবন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে আরও উৎকর্ষ সাধনে সহায়তা করবে। এটি ভারতের ভবিষ্যত প্রজন্মের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের ক্ষমতায়ন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুকেশ আম্বানির এই উদার দান শিক্ষা ও বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে থাকবে